স্বাগতম

বাংলাদেশ মহিলা সমিতি

'নারী অধিকার শতাব্দীর অঙ্গীকার'

'শতবর্ষে ডক্টর নীলিমা ইব্রাহিম' স্মরণে বাংলাদেশ মহিলা সমিতির বাংলা ওয়েবসাইট অবমুক্ত করা হলো ۔ তারিখ- ১১ অক্টোবর ২০২১ খ্রিঃ

বাংলাদেশের শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ক্ষেত্রে পথিকৃৎ, নারী ও মানব আন্দোলনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত, বিশিষ্ট চিন্তাবিদ প্রফেসর ডক্টর নীলিমা ইব্রাহিম এর জন্ম শতবর্ষে বাংলাদেশ মহিলা সমিতির সকল সদস্যের পক্ষ থেকে নিবেদন করি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি –

সিতারা আহসানউল্লাহ
সভানেত্রী
বাংলাদেশ মহিলা সমিতি

ড. নীলিমা ইব্রাহিম এক ক্ষণজন্মা নারী-
শতবর্ষের শুভকামনা

জন্মের শতবর্ষে উপনীত হয়ে ড. নীলিমা ইব্রাহিম এর প্রতি জ্ঞাপন করি গভীর শ্রদ্ধা, সম্মান ভালোবাসা। বাংলাদেশের এক ক্ষণজন্মা নারী সমাজের সঙ্গে, যাপিত জীবনের সঙ্গে সংগ্রাম করেই হয়ে উঠেছিলেন অনন্য, ব্যতিক্রমী। নীলিমা রায় চৌধুরী থেকে নীলিমা ইব্রাহিম নামে পরিচিত হওয়া সে এক দীর্ঘ পরিক্রমা, এক ইতিহাস। একজন কৃতী শিক্ষার্থী, সফল শিক্ষাবিদ নাকি তিনি একজন সার্থক সমাজসেবী এ বিষয় ভাবলে উত্তর একটিই- নীলিমা ইব্রাহিম তাঁর একাশি বছর জীবৎকালে এক অনন্য-সাধারণ মহীয়সী নারী হিসেবে নিজের স্থান অর্জন করে নিয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতিসম্পন্ন জনপ্রিয় শিক্ষক, রোকেয়া হলের প্রভোস্ট, বাংলা একাডেমির অবৈতনিক প্রথম মহিলা মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মহিলা সমিতির প্রতিষ্ঠাকালীন সভানেত্রী, বাংলাদেশের মঞ্চ নাটকের স্বপ্ন দেখা এক খোলামনের মানুষ, নীলিমা ইব্রাহিম আমাদের অনুপ্রেরণা! বাংলাদেশে আজ শিক্ষিত, অতি শিক্ষিত সম্মান পাওয়া নারীর অভাব নেই কিন্তু ষাট বছর আগে এই চিত্র ছিল সম্পূর্ণ অকল্পনীয়। ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর বাংলা বিভাগ থেকে প্রথম পিএইচডি ডিগ্রী প্রাপ্তা বিদূষী নারী তাঁর কর্মেই স্মরণীয়, বরণীয়। অন্যায়ের সংঙ্গে আপসহীন, অত্যন্ত যুক্তিবাদি, প্রখর মেধাসম্পন্ন একজন নারী বেঁচে থাকেন তাঁর কর্মে, যোগ্যতায়, পরবর্তী প্রজন্মের কাছে স্মরণে- মননে।

বাংলাদেশ মহিলা সমিতি দীর্ঘ ত্রিশ বছর যাঁর সুযোগ্য নেতৃত্ব লাভে ঋদ্ধ হয়েছে, তিনি নীলিমা ইব্রাহিম। প্রশাসনিক দক্ষতা, নাটকের প্রতি অফুরন্ত ভালোবাসা, অসহায় নারীদের সমাজে মাথা তুলে দাঁড়াবার যোগ্যতা অর্জনে সহায়তা করা এই কর্মবীর জানতেন কর্ম, চিন্তা, নিরলস নারী উন্নয়নে নিজেকে ব্যাপৃত রাখার মধ্যেই তাঁর বেঁচে থাকা।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি দেশ ত্যাগ করেন নি। তিনি বিশ্বাস করেছেন, দেশের মধ্যে থেকে লড়াই হচ্ছে অধিক প্রয়োজন। যে কারণে দীর্ঘ মাসের পর মাস গ্রামে গ্রামান্তরে অসহনীয়, অবর্ণনীয় অবস্থায় থেকেও তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নানাবিধ কাজ করেছেন।

স্বাধীনতার পর অন্যতম যে দুটি কাজে তিনি আত্ননিয়োগ করেছিলেন তার একটি, যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে সম্ভ্রমহারানো নারীদের পুনর্বাসনের লক্ষে নারী পুনর্বাসন কেন্দ্রে, নিরলস সেবা দান। বঙ্গবন্ধুর একান্ত অনুরোধে এবং দেশপ্রেমের মূর্ত প্রতীক হয়ে ড. নীলিমা ইব্রাহিম নারীদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তাদের সেই বেদনাময় দিনগুলির সাক্ষী হয়ে আশা ও সান্ত্বনার আলো হয়েছিলেন। এরই ফলশ্রুতিতে পরবর্তীতে সৃষ্টি হয় তার অসামান্য গ্রন্থ ‘আমি বীরাঙ্গনা বলছি’ স্বাধীনতার এক দলিল হয়ে আছে এই গ্রন্থের প্রত্যেকটি চরিত্র। অতি সম্প্রতি এই গ্রন্থের ইংরেজী অনুবাদ প্রকাশ করেছে বাংলা একাডেমী- A War Heroine, I Speak- শিরোনামে ভাষান্তর করেছেন সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি অফ ফ্লোরিডার খ্যাতনামা অধ্যাপক ডক্টর ফাইয়েজা হাসানাত।

শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থান- এটি ড. নীলিমা ইব্রাহিম এর আরেকটি অন্যতম চিন্তার ফল। যুদ্ধে শহীদের দেশের মাটিতে সম্মানের সংঙ্গে দাফনের উদ্দেশে তিনি অগ্রণীর ভূমিকা পালন করেছিলেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে লক্ষ শহীদের দাফন হলেও তা রয়ে গিয়েছে অরক্ষিত, নামহীন। ঢাকার মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে অনেক শহীদের দেহাবশেষ সমাধীস্থ করা হয়েছে এবং তা দেশ ও জাতির কাছে সুরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। ছায়া ঢাকা স্নিগ্ধ সেই চিরশান্তির আবাসে এক টুকরো মাটিতেই ড. নীলিমা ইব্রাহিম তাঁর শেষ শয্যা পেতেছেন দেশকে পরম ভালোবেসে, এই মাটিকে সম্মান করে।
জন্মশত বর্ষের ঊষালগ্নে আমাদের মধ্যে তিনি আশার আলো হয়ে জ্বলে আছেন। একজন মধ্যবিত্ত বাঙ্গালী, নিপাট সাদাসিধে জীবন যাপনে বিশ্বাসী ডক্টর নীলিমা ইব্রাহিম কেবল মাত্র নারী নন, ‘মানুষ’ এর অভীধায় তিনি একজন প্রকৃত ‘মানুষ’ হয়ে উঠেছিলেন বলেই শতবর্ষের জন্মদিনের স্বর্ণোজ্জ্বল মুকুট খানি আমরা তাঁর মাথায় পরিয়ে দিতে পেরেছি। বাংলাদেশ মহিলা সমিতি এই মহতী নিবেদিত-প্রাণ শিক্ষাবিদ, সমাজবিদ এর উদ্দেশে জানায় অশেষ কৃতজ্ঞতা ও গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি। ড. নীলিমা ইব্রাহিম, এক এবং অনন্য। তাঁর তুলনা একমাত্র তিনি নিজেই।

ডক্টর নীলিমা ইব্রাহিম স্মরণে ওয়েবপেইজ এ একটি বাংলাসাইট চালু করা হয়েছে – এটি মহীয়সী নারীর প্রতি বাংলাদেশ মহিলা সমিতির পক্ষ থেকে নিবেদিত শ্রদ্ধার্ঘ্য।

ড.মারুফী খান
সহ-সভানেত্রী
বাংলাদেশ মহিলা সমিতি

শুভেচ্ছা বাণী সমূহ

সৈয়দ আজিজুল হক

আমার পরমশ্রদ্ধেয় শিক্ষক অধ্যাপক ড. নীলিমা ইব্রাহিমের জন্মশতবার্ষিক উপলক্ষে তাঁকে…

Read More

সেলিনা চৌধুরী

১১অক্টোবর ২০২১ ড.নীলিমা ইব্রাহিমের শততম শুভ জন্মদিন। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ,…

Read More

রামেন্দু মজুমদার

শিক্ষাবিদ, সমাজসেবী, অসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রতিমূর্তি ড. নীলিমা ইব্রাহিম বাংলাদেশের নাট্যচর্চার…

Read More

ডা. ফওজিয়া মোসলেম 

নীলিমা ইব্রাহীমের জন্মদিনে প্রগতিবাদী ব্যক্তিত্ব নীলিমা  ইব্রাহীমের জন্মদিনে জানাই বিনয়…

Read More

রোকেয়া কবীর

শততম জন্ম দিবসে ড. নীলিমা ইব্রাহিমের প্রতি বাংলাদেশ নারী প্রগতি…

Read More

মেঘনা গুহঠাকুরতা

ড. নীলিমা  ইব্রাহিমের  শতবর্ষের  উদ্দেশ্যে  মেঘনা গুহঠাকুরতার শুভেচ্ছা বানী। বাংলাদেশের …

Read More