চেয়ারপার্সন – শামীম আক্তার চৌধুরী
২০০১ সালের প্রথমার্ধে সমগ্র বিশ্বে আকস্মিকভাবে ব্রেস্ট ক্যান্সার (স্তন ক্যান্সার) এর দ্রত বিস্তার ঘটতে থাকে। ২০০২ সালে বাংলাদেশে প্রকাশিত বার্ষিক জাতীয় মেডিকেল রিপোর্টে তথ্য প্রকাশিত হয় যে, বাংলাদেশে ২৩,৩০০ জন নারীর ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত। এই তথ্যের উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ মহিলা সমিতি মরণ ব্যাধী স্তন ক্যান্সারের বিরুদ্ধে সচেতনতা কার্যক্রম আরম্ভ করে। প্রাথমিকভাবে লিফলেট, পত্রিকার মাধ্যমে প্রচার সীমাবদ্ধ থাকলেও ২০০৩ থেকে এই কার্যক্রমটি আরো গতিশীল করা হয়। “নিরাময়ের চেয়ে সচেতনতা কাম্য” এই স্লোগানকে সামনে রেখে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়, সচেতনতা ক্যাম্প এর আয়োজন ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
২০০৬-২০০৭ এ বিদেশী দাতা সংস্থা অস্ট্রেলিয়ার ‘কান্ট্রি উইমেন এসোসিয়েশন অব তাসমেনিয়া’ আর্থিক সহায়তায় রোগ নির্ণয়ের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি ও অভিজ্ঞ মহিলা ডাক্তার দিয়ে বাংলাদেশ মহিলা সমিতি ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় ক্যাম্পের আয়োজন করে। এই প্রকল্পের অধীনে বিনামূল্যে মোট ৬টি পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল ক্যাম্প পরিচালিত হয়।
২০০৭-২০০৮ এ কান্ট্রি উইমেন এসোসিয়েশন অব দা ওয়ার্ল্ড এর আর্থিক সহযোগিতায় ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বিনামূল্যে মোট ৮টি ক্যাম্প পরিচালিত হয়। পরবর্তীতে ২০০৯ থেকে বামস নিজস্ব অর্থায়নে সমগ্র কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। বিনামূল্যে সচেতনতা ক্যাম্পের সাথে সাথে বাংলাদেশ মহিলা সমিতি প্রধান কার্যালয়ে সপ্তাহে ৩(তিন) দিন অভিজ্ঞ মহিলা ডাক্তার দ্বারা রোগীর প্রাথমিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়। এর ফলশ্রুতিতে বহু নারী উপকৃত হয়ে থাকেন। “ভয় নয় ক্যান্সার জয়” আমরা এই নীতিতে বিশ্বাস করি কেননা প্রাথমিক অবস্থায় নির্নীত হলে স্তন ক্যান্সার সম্পূর্ণরূপে নিরাময় যোগ্য এবং পরবর্তীতে একজন নারী সুস্থ দীর্ঘ জীবন লাভ করেন।
২০০৪ সালে বামসর তদানীন্তন যুগ্ম সম্পাদিকা ক্যান্সার সারভাইবার সিতারা আহসানউল্লাহর এই প্রকল্পের প্রতিষ্ঠা ও কর্মকান্ডের প্রতি নিষ্ঠার কারনে বামসর পক্ষ থেকে স্বীকৃতি স্বরূপ এই প্রকল্পটি তার নামে নামকরণ করা হয়। ২০২২ সাল পর্যন্ত এই প্রকল্পে সরাসরি ডাক্তারী পরীক্ষা নীরিক্ষায় পরিষেবা গ্রহণ করেছেন ১৩,৩০০ জন। বিনামূল্যে পরিচালিত মেডিকেল ক্যাম্প হয়েছে মোট ২৭টি এবং এতে অংশগ্রহণ করেছেন কয়েক সহস্রাধিক নারী।